লালনগীতি - খোদা রয় আদমে মিশে (অরূপ রাহী)

কার জন্য মন হলি হত
সে খোদা আদমে আছে
খোদা রয় আদমে মিশে । ।

আল্লা আদম আর মুহাম্মদ
এই তিনজনায় নাই ভেদাভেদ
এক আত্মায় মিশে।
দেখবি যদি হযরত নবী
এশকেতে আছে । ।

নাম দিয়ে সাঁই কোথায় লুকালেন
মুর্শিদ ধরে সাধন করলে নিকটে মেলে
আত্মারূপে কর্তা হলো
কর তার দিশে । ।

যার হয়েছে ভাব মহাজ্ঞান
সেই দেখবে নূর তাজুল্লাহ
অন্যে দেখবে কেন
লালন বলে জ্ঞানী যারা দেখবে অনাসে । ।

যে খোদা খোদা বলে মন্দির, মসজিদ, গুরুদুয়ারা সরব করে তুলছি সে খোদা আমাদের এ দেহে মিশে আছে। আল্লাহ, আদম আর মুহাম্মদ এ তিনজন এক, সব এক আত্মায় গিয়ে মিশে। আহাদ আর আহাম্মদ, শুধু মীমের ফারাক, এ মীম হল দুনিয়ার প্রতীক নবী মুহাম্মদ। ঐ যে বলে না তাঁকে সৃষ্টি করা না হলে দুনিয়াই সৃষ্টি করা হত না। সেই নবীকে পেতে হলে প্রেমের পথেই পাওয়া যাবে।

আদমকে সিজদা না করেই শয়তান পতিত হয়, আদম যদি আল্লাহ না হত তাহলে সিজদা করতে বলা হত না, শির্‌ক হত। আদম যদি আল্লাহ হয় আদমের বংশধররাও তাই। আমাদের এ নামরুপের আড়ালে ঈশ্বর লুকিয়ে আছেন, কামেল মুর্শিদের কাছে গিয়ে সাধন করলে তাকে কাছে পাওয়া যায়।লালন বলছেন, জীবাত্মা কিভাবে কর্তা হয় তার দিশে কর।

এর মধ্যে যার ভাব মহাজ্ঞান অর্থাৎ আত্মজ্ঞান হয়েছে সেই একমাত্র আল্লাহর নূর দেখতে পাবে। লালন বলেন, অবশ্য জ্ঞানী যারা তারা অনায়াসে তাঁকে দেখতে পাবে।